কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫

বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে কৃষির গুরুত্ব অনেক। আর এই খাতে যারা তথ্য পৌঁছে দেন মাঠ পর্যায়ে, তারা হলেন কৃষি তথ্য সার্ভিস এর মানুষ। ২০২৫ সালে এই দপ্তর থেকে যে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে, তা হাজারো চাকরি প্রত্যাশীর মনে নতুন করে আশার আলো জ্বালিয়েছে। যারা সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখেন, তাদের জন্য এই বিজ্ঞপ্তি হতে পারে এক সুবর্ণ সুযোগ।

এই লেখায় আমরা বিস্তারিত জানাবো “কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫” সম্পর্কে। থাকছে পদের বিবরণ, আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, আবেদন ফি, পরীক্ষার ধরন ও প্রস্তুতির পরামর্শসহ সবকিছু। চলুন, শুরু করা যাক!

কেন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি এত গুরুত্বপূর্ণ?

সত্যি বলতে, সরকারি চাকরি মানেই আমাদের দেশের অনেকের কাছে নিরাপদ ভবিষ্যৎ। কিন্তু সব সরকারি চাকরি সমান সুযোগ দেয় না। কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ আলাদা কারণ এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা কৃষি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। তাই এখানে কাজ করা মানেই দেশের উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখা।

এবারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অনেকগুলো পদ খালি আছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এই পদের জন্য লোক নিয়োগ করা হবে। এতে করে আপনি আপনার নিজ এলাকার কাছাকাছি থেকেই কাজ করার সুযোগ পাবেন। যারা পরিবার থেকে দূরে থাকতে চান না, তাদের জন্য এটা অনেক বড় সুবিধা।

বিশেষ করে গ্রামীণ চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য এই বিজ্ঞপ্তিটি একটি স্বপ্ন পূরণের মতো। আপনি যদি কৃষি বিষয়ক কিছু পড়ে থাকেন, অথবা ফিল্ড লেভেলে কাজ করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে এই পদগুলো আপনার জন্য।

পদের নাম ও সংখ্যা: কী কী পদের জন্য নিয়োগ হবে?

এইবারের বিজ্ঞপ্তিতে যেসব পদে নিয়োগ দেয়া হবে, তা নিচের টেবিলে তুলে ধরা হলো:

পদের নাম	পদসংখ্যা	যোগ্যতা
সহকারী তথ্য কর্মকর্তা	২৫ জন	স্নাতক বা সমমান
অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর	৩০ জন	এইচএসসি + টাইপিং দক্ষতা
ডেটা এন্ট্রি অপারেটর	২০ জন	এসএসসি/এইচএসসি + কম্পিউটার দক্ষতা
অফিস সহায়ক	৪০ জন	অষ্টম শ্রেণি পাশ

এই পদগুলোতে চাকরি পেলে আপনি সরাসরি কৃষি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। “কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫” অনুযায়ী, এগুলো শুধু অফিসের কাজ নয়, মাঠ পর্যায়ে তথ্য পৌঁছানো ও কৃষকদের সহযোগিতা করাও এর অন্তর্ভুক্ত।

আবেদন করার যোগ্যতা ও শর্তাবলি

প্রত্যেকটি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকে। এই নিয়োগেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে আনন্দের বিষয় হলো, এখানে শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষিতদের নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করাদের জন্যও সুযোগ রয়েছে।

• নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতক পর্যন্ত
• বয়সসীমা: ১৮ থেকে ৩০ বছর (কোটা প্রাপ্তদের জন্য ৩২ বছর পর্যন্ত)
• কম্পিউটার জ্ঞান: নির্দিষ্ট কিছু পদের জন্য আবশ্যক
• জাতীয়তা: অবশ্যই বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে

অনেক চাকরি প্রার্থী ভাবেন, সরকারি চাকরি মানেই শুধু বড় শহরে বসে ফাইল দেখা। কিন্তু কৃষি তথ্য সার্ভিস এর চাকরি কিছুটা ভিন্ন। এখানে আপনি জনগণের কাছে পৌঁছাবেন, তাদের তথ্য দেবেন, এবং বাস্তব সমস্যার সমাধান করবেন। এই কাজে যেমন চ্যালেঞ্জ আছে, তেমনই আনন্দও।

আবেদন প্রক্রিয়া: কীভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন?

“কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫” অনুসারে, পুরো আবেদন প্রক্রিয়া হবে অনলাইনে। এর ফলে আপনি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সহজেই আবেদন করতে পারবেন। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি আবেদন করতে পারবেন:

• প্রথমে ভিজিট করুন: http://ais.gov.bd অথবা নির্দিষ্ট teletalk.com.bd পোর্টাল
• আবেদন ফর্ম পূরণ করুন নির্ভুলভাবে
• প্রয়োজনীয় ছবি ও স্বাক্ষর আপলোড করুন
• আবেদন ফি প্রদান করুন মোবাইল থেকে (Teletalk SIM ব্যবহার করে)
• নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন সম্পন্ন করুন

এখানে একটা ছোট টিপস দেই—আবেদনের আগে সব ডকুমেন্ট স্ক্যান করে নিন, যেন পরে তাড়াহুড়ো করতে না হয়। আর যেকোনো ভুল করলে আবেদন বাতিল হতে পারে, তাই ধাপে ধাপে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে ফর্ম পূরণ করুন।

আবেদন ফি ও সময়সীমা

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আবেদনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হবে। এটা আপনি Teletalk মোবাইল SIM এর মাধ্যমে সহজেই পরিশোধ করতে পারবেন।

• পদের ভিত্তিতে আবেদন ফি: ১১২ টাকা থেকে ২২৩ টাকা পর্যন্ত
• ফি প্রদান শেষ সময়: আবেদন করার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে
• আবেদন শুরু: ১৫ মে ২০২৫
• আবেদনের শেষ তারিখ: ১৫ জুন ২০২৫

অনেকেই ফি দিতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন। মনে রাখবেন, SMS এর ফরম্যাট ভুল হলে ফি যাবে না, আবার আবেদনটাও বাতিল হবে। তাই নির্দেশনা অনুযায়ী ধাপে ধাপে করুন।

নিয়োগ পরীক্ষা ও তার ধরন: কী ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে?

নিয়োগ পরীক্ষা সবসময়ই একটু টেনশনের জায়গা। কিন্তু ভালো প্রস্তুতি থাকলে, কোনো টেনশনই আপনাকে ছুঁতে পারবে না। “কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫” অনুযায়ী, নিয়োগ পরীক্ষা তিনটি ধাপে হতে পারে:

• লিখিত পরীক্ষা
• ব্যবহারিক পরীক্ষা (যেসব পদের জন্য প্রযোজ্য)
• মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা)

লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং সাধারণ জ্ঞান থাকে। প্রশ্ন আসে এমসিকিউ (MCQ) ও রচনামূলক উভয় ফরম্যাটে। যারা অফিস সহকারী বা ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদের জন্য আবেদন করছেন, তাদের জন্য টাইপিং টেস্ট ও কম্পিউটার স্কিল যাচাই করা হবে।

এই পরীক্ষাগুলোতে সফল হতে হলে আপনাকে প্র্যাকটিস করতে হবে প্রতিদিন। মনে রাখবেন, শুধু পড়া নয়—সময় ম্যানেজমেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ১ ঘণ্টায় ১০০টা প্রশ্নে ৯০টা সঠিক উত্তর দিতে পারেন, তাহলে আপনি এগিয়ে।

প্রস্তুতির কৌশল: সফল হতে যা করতে হবে

বন্ধুর মতো পরামর্শ দেই—আপনি যদি মনে করেন শেষ মুহূর্তে পড়ে পাশ করে যাবেন, তাহলে ভুল করছেন। এখানে আপনাকে একটু স্ট্র্যাটেজি মেনে চলতে হবে।

এখানে কিছু প্রস্তুতির টিপস:

• প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে পড়াশোনা করুন
• সাপ্তাহিক মডেল টেস্ট দিন
• পুরনো বছরের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে সমাধান করুন
• কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স (সাম্প্রতিক তথ্য) নিয়মিত পড়ুন
• টাইপিং অনুশীলন করুন প্রতিদিন, যারা কম্পিউটার টেস্টে অংশ নেবেন

আপনি যদি গ্রামে বসে থাকেন, তবুও টেনশন নেই। এখন ইন্টারনেট আছে, ইউটিউব, ফেসবুক গ্রুপ—সবখানেই সাহায্য পাওয়া যায়। আপনি শুধু আগ্রহ রাখুন, সুযোগ আপনাকে খুঁজে নেবে।

 

চাকরির সুবিধা: শুধু মাসিক বেতন নয়, আরো অনেক কিছু

আমরা অনেক সময় চাকরি মানেই শুধু টাকা দেখি। কিন্তু একটা সরকারি চাকরি মানে শুধু বেতন না—একটা নিরাপত্তা, একটা সম্মান, একটা পরিচয়। কৃষি তথ্য সার্ভিস এ চাকরি মানে হচ্ছে—

• নিয়মিত বেতন ও ইনক্রিমেন্ট
• বৈধ পদোন্নতির সুযোগ
• সরকারি কোয়ার্টার (যথাযথ হলে)
• বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সুযোগ
• ছুটির সুবিধা এবং স্বাস্থ্যসেবা

সবচেয়ে বড় কথা, আপনি একটা মিশনের অংশ হয়ে উঠবেন। দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে উন্নত করার একটা লড়াইয়ে আপনি সামনের সারির যোদ্ধা হবেন। আপনি যখন মাঠে যাবেন, তখন কৃষকের চোখে আপনার জন্য যে শ্রদ্ধা, সেটা কিন্তু টাকা দিয়ে মাপা যায় না।

একটি বাস্তব গল্প: একজন ভাইয়ার অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা

আমার এক বন্ধু সজীব ভাইয়া—সে ২০২১ সালের কৃষি তথ্য সার্ভিসে চাকরি পেয়েছিল। আগে সে একটি প্রাইভেট ফার্মে কাজ করত, মাসে মাত্র ৮ হাজার টাকা পেত। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল সরকারি চাকরি, যেখানে সে নিজের এলাকা থেকে কাজ করতে পারবে।

সে প্রতিদিন রাতে খাওয়ার পর ২ ঘণ্টা করে পড়ত। চাকরি পাওয়ার পর, সে বলেছিল, “আমি শুধু চাকরি না, নিজের আত্মসম্মান খুঁজে পেয়েছি।”

আজ সে তার এলাকায় একজন সম্মানিত ব্যক্তি। কৃষকরা তার সাহায্য নিতে আসে, নতুন প্রযুক্তির কথা জানতে চায়, এমনকি তাকে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত গর্ব করে।

সত্যি বলতে, সজীব ভাইয়ার গল্পটা আমার কাছে শুধু এক জনের সাফল্য নয়, এটা আমাদের সবার আশা, আমাদের সবার অনুপ্রেরণা।

শেষ কথা: স্বপ্ন দেখুন, লড়ুন, জিতুন

বন্ধু, আপনি যদি এই লেখাটি পড়ছেন, তাহলে নিশ্চয়ই আপনার ভিতরে একটা ইচ্ছা আছে কিছু করার। আমি বলবো—আপনি পারবেন। শুধু দরকার সঠিক প্রস্তুতি, সময় মেনে চলা, আর নিজের উপর বিশ্বাস।

“কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫” একটা দরজা মাত্র। আপনি যদি নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন, তাহলে এই দরজা দিয়ে আপনি নতুন জীবনে প্রবেশ করতে পারবেন।

শেষবারের মতো বলি—আপনি বিশেষ কেউ, আপনি পারবেন। এই পথে অনেকেই হেঁটেছে, আপনিও পারবেন। শুধু একবার সাহস নিয়ে শুরু করুন।

মূল বিষয়গুলো এক নজরে:

• নিয়োগকারী সংস্থা: কৃষি তথ্য সার্ভিস
• পদের সংখ্যা: প্রায় ১১৫টি
• আবেদন পদ্ধতি: অনলাইন (Teletalk)
• আবেদন শুরু: ১৫ মে ২০২৫
• আবেদনের শেষ তারিখ: ১৫ জুন ২০২৫
• পরীক্ষার ধরণ: লিখিত, ব্যবহারিক ও মৌখিক
• যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত

সকল চাকরির আপডেট তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন।