পদার্থবিজ্ঞান ১০ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SSC 2026)

পদার্থবিজ্ঞান ১০ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SSC 2026)

In This Content

১. চুল আঁচড়ে চিরুনি কাগজের ছোট টুকরাকে আকর্ষণ করে কেন?

উত্তর: যখন আমরা শুকনো চুল আঁচড়াই, তখন চিরুনির সাথে চুলের ঘর্ষণ ঘটে এবং চিরুনিতে অতিরিক্ত ইলেকট্রন জমা হয়। ফলে চিরুনি ঋণাত্মক আধানযুক্ত হয়ে যায়। এখন এই চিরুনি যদি কাগজের ছোট টুকরার কাছে আনা হয়, তাহলে কাগজে বিপরীতধর্মী আধান সৃষ্টি হয়। আধান বিপরীত হওয়ায় চিরুনি কাগজের টুকরোগুলোকে আকর্ষণ করে। এই ঘটনাকে বলা হয় স্থির তড়িৎ আবেশ। দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকক্ষেত্রে এরকম ঘটনা দেখি, যেমন—শীতকালে উলের জামা খুললে হালকা স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়, সেটিও একই কারণে ঘটে।

২. ঘর্ষণের মাধ্যমে কোনো বস্তুকে কীভাবে আহিত করা যায়?

উত্তর: সাধারণ অবস্থায় একটি বস্তুর পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান থাকে। তাই বস্তুটি নিস্তড়িৎ বা নিরপেক্ষ থাকে। কিন্তু যখন দুটি বস্তু একে অপরের সাথে ঘর্ষিত হয়, তখন এক বস্তুর কিছু ইলেকট্রন অন্য বস্তুর দিকে সরে যায়। ফলে একটি বস্তু ইলেকট্রন হারিয়ে ধনাত্মক আহিত হয়, অপর বস্তু ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আহিত হয়। যেমন—শুকনো কাচের দণ্ড রেশম কাপড়ে ঘষলে কাচের দণ্ড ধনাত্মক আহিত হয় এবং রেশম কাপড় ঋণাত্মক আহিত হয়। এভাবেই ঘর্ষণের মাধ্যমে আধান উৎপন্ন হয়।

৩. তড়িৎ আবেশ কী? এটি কীভাবে স্থায়ীভাবে করা যায়?

উত্তর: কোনো নিরপেক্ষ বস্তুর কাছে একটি আহিত বস্তুকে আনলে ওই নিরপেক্ষ বস্তুর মধ্যে আধান পুনর্বিন্যাস ঘটে। অর্থাৎ এর এক প্রান্তে ধনাত্মক আধান, অন্য প্রান্তে ঋণাত্মক আধান জমা হয়। এ প্রক্রিয়াকে তড়িৎ আবেশ বলা হয়। এখন যদি নিরপেক্ষ বস্তুর একটি প্রান্তকে ভূমির সাথে সংযুক্ত করা হয়, তবে একটি ধরণের আধান ভূমিতে চলে যায়। পরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আহিত বস্তুকে সরিয়ে ফেললে নিরপেক্ষ বস্তুতে একটি প্রকারের আধান স্থায়ীভাবে থেকে যায়। এভাবেই আবেশের মাধ্যমে কোনো নিরপেক্ষ বস্তু স্থায়ীভাবে আহিত করা যায়।

See also  স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস

৪. রং স্প্রে করার কাজে স্থির তড়িৎ কীভাবে ব্যবহৃত হয়?

উত্তর: শিল্পক্ষেত্রে গাড়ি বা ধাতব যন্ত্রপাতিতে রং করতে স্প্রে গান ব্যবহার করা হয়। এ স্প্রে গান একটি স্থির তড়িৎ জেনারেটরের সাথে যুক্ত থাকে। ফলে স্প্রে থেকে নির্গত রংয়ের ক্ষুদ্র কণাগুলো আহিত হয়ে চার্জ বহন করে। অপরদিকে গাড়ির গায়ে ভূপৃষ্ঠের সাথে সংযুক্ত বিভব দেওয়া থাকে, তাই তা বিপরীত আধান বহন করে। ফলস্বরূপ রংয়ের কণাগুলো গাড়ির ধাতব গায়ে দৃঢ়ভাবে লেগে যায়। এতে রং সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং অপচয়ও কমে। এইভাবে স্থির তড়িৎ প্রযুক্তি ব্যবহার করে রং স্প্রে করা হয়।

৫. বিমানে জ্বালানি ভরার সময় স্থির তড়িৎ কেন বিপজ্জনক?

উত্তর: বিমান যখন আকাশে উড়ে, তখন বাতাসের সাথে ঘর্ষণের ফলে এর গায়ে স্থির তড়িৎ জমে। ফলে বিমান ও ভূমির মধ্যে বিভব পার্থক্য ক্রমশ বাড়তে থাকে। এখন যদি জ্বালানি ভরার সময় এ বিভব পার্থক্য বজায় থাকে, তবে হঠাৎ ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়ে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করতে পারে। এই স্ফুলিঙ্গ জ্বালানির সাথে বিক্রিয়া করে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। এজন্য বিমান অবতরণের পর ভূমির সাথে বিশেষ তার দিয়ে সংযুক্ত করা হয়, যাতে স্থির তড়িৎ নিষ্কাশিত হয় এবং নিরাপদে জ্বালানি ভরা যায়।

৬. তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুর বিভব কীভাবে পরিমাপ করা হয়?

উত্তর: তড়িৎক্ষেত্রের বিভব নির্ণয় করতে অসীম থেকে একটি একক ধনাত্মক আধান ঐ বিন্দুতে আনা হয়। এ আধান আনতে যে কাজ সম্পন্ন হয়, সেটাই ঐ বিন্দুর বিভব নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ছোট ধনাত্মক আধান যদি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে আনা হয়, তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ বিভব হিসেবে ধরা হয়। বিভব একটি স্কেলার রাশি এবং এটি জুল প্রতি কুলম্ব এককে প্রকাশ করা হয়। বাস্তবে বিভবের ধারণা দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের শক্তি ও সম্ভাব্য কাজ নির্ধারণ করা হয়।

৭. বিভব পার্থক্যের ব্যবহারিক গুরুত্ব কী?

উত্তর: দুটি বিন্দুর মধ্যে বিভব পার্থক্য থাকলে আধান এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সঞ্চালিত হয়। এই সঞ্চালনকে আমরা বিদ্যুৎ প্রবাহ হিসেবে পাই। বিভব পার্থক্যের ফলে তৈরি হওয়া প্রবাহ বিভিন্ন যন্ত্রে প্রয়োগ করা হয়। যেমন—বাল্ব জ্বালাতে, হিটার গরম করতে, ফ্যান চালাতে বা টেলিভিশনে ছবি দেখাতে। বিদ্যুৎ শক্তি মূলত বিভব পার্থক্যের কারণে পাওয়া যায় এবং এটি যান্ত্রিক শক্তি, তাপ শক্তি কিংবা আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে। তাই বিভব পার্থক্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের মূল ভিত্তি।

৮. পৃথিবীর বিভব শূন্য ধরা হয় কেন?

উত্তর: পৃথিবী একটি বিশাল আকৃতির পরিবাহক, যা অসীম পরিমাণ ঋণাত্মক আধান ধারণ করতে পারে। কোনো ছোট পরিবাহকে ধনাত্মক আধান দিলে এর বিভব বাড়ে, কিন্তু পৃথিবীর মতো বিশাল আকারের পরিবাহকে সামান্য আধান দিলে বিভবে কোনো পরিবর্তন ধরা যায় না। তাই পৃথিবী থেকে ইলেকট্রন সরানো বা এতে ইলেকট্রন দেওয়ার ফলে এর বিভব অপরিবর্তিত থাকে। এজন্য পদার্থবিজ্ঞানে পৃথিবীর বিভবকে শূন্য ধরা হয়। বিভব শূন্য ধরা হলে অন্যান্য আধানের বিভব সহজে নির্ণয় করা যায়।

See also  পদার্থবিজ্ঞান ৯ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SSC 2026)

৯. বজ্রপাত কীভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর: আকাশে মেঘ তৈরি হয় জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র পানিকণায় রূপ নিলে। এসব পানিকণা পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে তড়িৎ আহিত হয়। ফলে মেঘের একটি অংশ ধনাত্মক, অপর অংশ ঋণাত্মক আধান ধারণ করে। মেঘের অভ্যন্তরে অথবা মেঘ ও পৃথিবীর মধ্যে বিভব পার্থক্য প্রচণ্ড বেড়ে গেলে হঠাৎ আধান সঞ্চালন ঘটে। এর ফলে আকাশে উজ্জ্বল আলো ও প্রচণ্ড শব্দ সৃষ্টি হয়, যাকে বজ্রপাত বলে। বজ্রপাত আসলে মেঘ থেকে আধান নিষ্কাশনের একটি প্রক্রিয়া।

১০. বজ্রবৃষ্টির সময় গাছের নিচে দাঁড়ানো বিপজ্জনক কেন?

উত্তর: বজ্রপাতের সময় তড়িৎ স্রোত সবসময় সংক্ষিপ্ততম পরিবাহী পথ ধরে ভূমিতে পৌঁছায়। যদি কোনো মানুষ খোলা জায়গায় থাকে, তবে সোজাসুজি তার শরীর দিয়েও বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে। কিন্তু লম্বা গাছ পরিবাহী হওয়ায় সেটি সহজ পথ হিসেবে কাজ করে। মেঘ থেকে আসা প্রবল তড়িৎ প্রবাহ গাছের কাণ্ড দিয়ে নিচে নামতে গিয়ে পাশে থাকা মানুষকে আঘাত করতে পারে। এতে প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই বজ্রবৃষ্টির সময় গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক।

১১. বজ্র নিরোধক কীভাবে কাজ করে?

উত্তর: বজ্র নিরোধক হলো একটি লম্বা ধাতব দণ্ড, যার শীর্ষ অংশ তীক্ষ্ণাগ্র হয় এবং তা ভবনের ছাদে স্থাপন করা হয়। বজ্রপাতের সময় মেঘ থেকে আসা আধান দণ্ডের তীক্ষ্ণ প্রান্ত দিয়ে আকৃষ্ট হয়ে মাটিতে প্রবাহিত হয়। দণ্ডটি একটি মোটা ধাতব তার দ্বারা মাটির সাথে যুক্ত থাকে। ফলে বাড়ি বা ভবনে সরাসরি আঘাত না লেগে আধান নিরাপদে ভূমিতে চলে যায়। এভাবে বজ্র নিরোধক ভবনকে বজ্রপাতের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

১২. কোনো বস্তুর আধান পরমাণুর গঠনের সাথে কীভাবে সম্পর্কিত?

উত্তর: প্রতিটি পরমাণুতে সমান সংখ্যক প্রোটন ও ইলেকট্রন থাকে, ফলে সেটি স্বাভাবিক অবস্থায় নিরপেক্ষ থাকে। যদি কোনো পরমাণু ইলেকট্রন হারায়, তবে প্রোটনের সংখ্যা বেশি হয়ে যায় এবং এটি ধনাত্মক আধানযুক্ত হয়। অন্যদিকে, কোনো পরমাণু অতিরিক্ত ইলেকট্রন গ্রহণ করলে ইলেকট্রনের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং এটি ঋণাত্মক আধানযুক্ত হয়। এই পরিবর্তনের কারণে বস্তু আহিত হয়। অর্থাৎ আধান আসলে ইলেকট্রনের সংখ্যার পরিবর্তনের ফল। পরমাণুর এই গঠন-ভিত্তিক ব্যাখ্যা দিয়েই বস্তু আহিত হওয়ার কারণ বোঝা যায়।

১৩. স্থির তড়িৎ দ্বারা স্প্রে পেইন্ট করার সুবিধা কী কী?

উত্তর: স্প্রে পেইন্ট করার ক্ষেত্রে রঙের কণাগুলো স্থির তড়িৎ দ্বারা আহিত হয়ে পেইন্ট করা ধাতব বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এতে রঙ সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন অংশ ফাঁকা থাকে না। পাশাপাশি রঙের অপচয় কম হয় কারণ কণাগুলো সরাসরি বস্তুতে জমা হয়, বাতাসে ভেসে যায় না। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে সময় বাঁচে, খরচ কমে এবং বস্তুটি দীর্ঘস্থায়ী আবরণ পায়। শিল্পকারখানায় গাড়ি, যন্ত্রপাতি ও ফার্নিচারে এই পদ্ধতিতে রং করা হয়।

See also  ইতিহাস, ৬ষ্ঠ অধ্যায় থেকে ২০টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

১৪. তড়িৎ ক্ষেত্র বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: কোনো আহিত বস্তুর চারপাশের সেই অঞ্চলে যদি অন্য কোনো আহিত বস্তু প্রবেশ করলে বল অনুভব করে, তবে ঐ অঞ্চলকে তড়িৎ ক্ষেত্র বলে। সহজভাবে বললে, আধানযুক্ত বস্তুর চারপাশে অদৃশ্য একটি প্রভাব এলাকা থাকে, যেখানে আধান বল প্রয়োগ করতে পারে। তড়িৎ ক্ষেত্রের শক্তি বা তীব্রতা নির্ভর করে আধানের মান ও দূরত্বের ওপর। এর মানকে সূত্র দিয়ে প্রকাশ করা যায়: E = F/q, যেখানে F হলো বল ও q হলো একক আধান।

১৫. স্থির তড়িৎ জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে কীভাবে?

উত্তর: স্থির তড়িৎ সাধারণত ক্ষুদ্র আকর্ষণ বা স্পার্ক তৈরি করে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। যেমন—বিমান উড্ডয়নের সময় ঘর্ষণে তড়িৎ জমে যায়, যা জ্বালানি ভরার সময় বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়ায়। আবার তেল ট্যাংকার বা গুদামে তড়িৎ স্ফুলিঙ্গ থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। এছাড়া বজ্রপাত স্থির তড়িৎ জমে বিস্ফোরণস্বরূপ মুক্ত হওয়ার কারণে ঘটে, যা মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি করে। তাই স্থির তড়িৎ অনেক ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে।

১৬. বজ্রপাত থেকে মানুষকে রক্ষার উপায় কী কী?

উত্তর: বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ, নদী বা উঁচু জায়গায় অবস্থান করা বিপজ্জনক। রক্ষার জন্য ঘরের ভেতরে থাকা সবচেয়ে নিরাপদ। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার বা মোবাইল ফোনে কথা বলা এড়িয়ে চলা উচিত। গাছের নিচে দাঁড়ানো যাবে না, বরং নিচু জায়গায় ঝুঁকে থাকা ভালো। বড় ভবনে বজ্র নিরোধক স্থাপন করলে ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া খালি পায়ে ভেজা মাটিতে হাঁটা থেকেও বিরত থাকতে হবে। এইসব নিয়ম মেনে চললে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকা যায়।

১৭. ভূমি সংযোগ বা গ্রাউন্ডিং কী এবং কেন দরকার?

উত্তর: ভূমি সংযোগ হলো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ধাতব আবরণকে একটি তারের মাধ্যমে সরাসরি মাটির সাথে যুক্ত করা। এটি করলে যন্ত্রে দুর্ঘটনাজনিত আধান জমলে তা নিরাপদে মাটিতে চলে যায় এবং ব্যবহারকারীকে শক থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, কম্পিউটার ইত্যাদির ক্ষেত্রে গ্রাউন্ডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুতের অতিরিক্ত প্রবাহ, শর্ট সার্কিট বা লিকেজ হলে ভূমি সংযোগ জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। তাই বৈদ্যুতিক নিরাপত্তায় গ্রাউন্ডিং অপরিহার্য।

১৮. বিভব পার্থক্য ছাড়া তড়িৎ প্রবাহ কেন সম্ভব নয়?

উত্তর: বিদ্যুৎ প্রবাহ মানে হলো আধানের সঞ্চালন। আধান সঞ্চালিত হতে হলে অবশ্যই দুটি বিন্দুর মধ্যে বিভব পার্থক্য থাকতে হয়। এটি অনেকটা পানির প্রবাহের মতো, যেখানে পানি সবসময় উচ্চস্থান থেকে নিম্নস্থানে যায়। বিভব পার্থক্য ছাড়া আধানের সঞ্চালনের কোনো প্রেরণা থাকে না। ব্যাটারি বা জেনারেটর আসলে বিভব পার্থক্য তৈরি করে, যার কারণে তড়িৎ প্রবাহ ঘটে। তাই বিভব পার্থক্য বিদ্যুৎ প্রবাহের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে।

১৯. পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রনের ভূমিকা কী?

উত্তর: প্রোটন ও ইলেকট্রন হলো পরমাণুর মৌলিক কণা। প্রোটন ধনাত্মক আধান বহন করে এবং নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে, আর ইলেকট্রন ঋণাত্মক আধান বহন করে ও নিউক্লিয়াসের বাইরে ঘূর্ণায়মান থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রোটন ও ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান থাকে, ফলে পরমাণু নিস্তড়িৎ থাকে। কিন্তু ইলেকট্রন হারালে ধনাত্মক আধান সৃষ্টি হয়, আর অতিরিক্ত ইলেকট্রন পেলে ঋণাত্মক আধান তৈরি হয়। অর্থাৎ আধানের সব পরিবর্তন আসলে ইলেকট্রনের সাথে সম্পর্কিত।

২০. বিদ্যুতের ব্যবহার আমাদের জীবনে কী প্রভাব ফেলে?

উত্তর: বিদ্যুৎ আধুনিক সভ্যতার অন্যতম প্রধান শক্তি। এটি ছাড়া আজকের প্রযুক্তিনির্ভর জীবন কল্পনা করা যায় না। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আমরা আলোকসজ্জা করি, যন্ত্রপাতি চালাই, চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করি। শিল্পকারখানা, কৃষি ও পরিবহন খাতে বিদ্যুৎ অপরিহার্য। বিভব পার্থক্যের কারণে বিদ্যুৎ প্রবাহ সম্ভব হয় এবং তা বিভিন্ন যন্ত্রে শক্তির ভিন্ন ভিন্ন রূপে রূপান্তরিত হয়। বিদ্যুৎ আমাদের জীবনকে সহজ, দ্রুত ও আরামদায়ক করেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top